Advertisement

0

ব্রেকিং নিউজ: সৌদি শান্তি আলোচনার আগে পুতিনকে বড় ছাড়ের প্রস্তাব ট্রাম্পের ইউরোপ ও ইউক্রেন উদ্বিগ্ন

 ব্রেকিং নিউজ: সৌদি শান্তি আলোচনার আগে পুতিনকে বড় ছাড়ের প্রস্তাব ট্রাম্পের  ইউরোপ ও ইউক্রেন উদ্বিগ্ন 

 ভূ-রাজনৈতিক প্রতিবেদক | ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

ব্রেকিং নিউজ সৌদি শান্তি আলোচনার আগে পুতিনকে বড় ছাড়ের প্রস্তাব ট্রাম্পের  ইউরোপ ও ইউক্রেন উদ্বিগ্ন



ট্রান্সআটলান্টিক জোটে নতুন উত্তেজনার জন্ম দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (বর্তমানে দ্বিতীয় মেয়াদে) রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তি টানতে সৌদি আরবে প্রস্তুত। তবে এই পদক্ষেপ ইউক্রেনকে প্রান্তিক করে এবং পশ্চিমা ঐক্যকে ভেঙে দেওয়ার unilateral শান্তি চুক্তির আশঙ্কা জাগিয়েছে, যার জেরে ইউরোপীয় নেতাদের মধ্যে ছটফটানি শুরু হয়েছে।  


ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক: আলোচনায় কী কী ছাড় দেওয়া হতে পারে?  

ট্রাম্প প্রশাসন রাশিয়াকে নজিরবিহীন ছাড় দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য:  

১. ইউক্রেন ও ইউরোপকে প্রাথমিক আলোচনা থেকে বাদ: সৌদি আরবে হওয়া আলোচনায় ইউক্রেনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। প্রাথমিকভাবে শুধু যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও পরবর্তীতে দাবি করেন, চূড়ান্ত আলোচনায় ইউক্রেন ও ইউরোপকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তবে ট্রাম্পের দূত কিথ কেলগ ইউরোপের অংশগ্রহণ নাকচ করে দিয়ে বলেন, শুধু "প্রধান পক্ষগুলি" (যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ইউক্রেন) আলোচনায় থাকবে।  

২. ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদ প্রত্যাখ্যান: রক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ বলেছেন, শান্তি চুক্তিতে ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদের পথ বন্ধ করা হবে, যা কিয়েভের নিরাপত্তাকে ঝুঁকিতে ফেলেছে। এছাড়া, রাশিয়ার দখলকৃত অঞ্চলগুলোকে স্বীকৃতি দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে তিনি ২০১৪-পূর্ব সীমান্ত ফেরতকে "অবাস্তব" বলে মন্তব্য করেছেন।  

৩. পুতিনের বৈশ্বিক অবস্থান পুনরুদ্ধার: ট্রাম্প রাশিয়াকে জি৭ (বর্তমানে জি৮) গ্রুপে ফিরিয়ে আনার পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন এবং ইউক্রেন আক্রমণের পুতিনের যুক্তিগুলোকে পুনর্ব্যক্ত করে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগকে হালকা করছেন। এটি পুতিনের আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্নতা কাটানোর লক্ষ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।  


ইউরোপের আতঙ্কিত প্রতিক্রিয়া 

ট্রাম্পের অপ্রত্যাশিত কৌশলে হকচকিয়ে যাওয়া ইউরোপীয় নেতারা প্রভাব বজায় রাখতে তৎপর:  

প্যারিসে জরুরি বৈঠক: ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ জার্মানি, ব্রিটেন, ইতালিসহ ইউরোপীয় নেতাদের সাথে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, ট্রাম্পের চুক্তি রাশিয়ার আগ্রাসনকে বৈধতা দেবে এবং ইউরোপের নিরাপত্তা কাঠামোকে নড়বড়ে করবে।  

সেনা মোতায়েনের চাপ: পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাডেক সিকোরস্কি সতর্ক করেছেন, ইউক্রেনে ইউরোপীয় সেনা পাঠানোর ট্রাম্পের দাবি ন্যাটো সদস্যদের ঝুঁকিপূর্ণ শান্তিরক্ষা মিশনে জড়াতে পারে। অন্যদিকে, সুইডেন ও ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার সেনা প্রেরণের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।  

প্রতিবন্ধকতা ঝুঁকিতে: ইউরোপীয় কর্মকর্তারা বলছেন, আলোচনায় ইউরোপকে উপেক্ষা করলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দুর্বল হতে পারে, যা পশ্চিমা অর্থনৈতিক চাপের মূল হাতিয়ার। 


 জেলেনস্কির প্রতিবাদ ও সৌদি আরবের ভূমিকা  

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি স্পষ্ট জানিয়েছেন, কিয়েভের সম্মতি ছাড়া কোনো চুক্তিই মানা হবে না: "ইউক্রেন ছাড়া ইউক্রেন সম্পর্কে কোনো সিদ্ধান্ত নয়!" ট্রাম্পের আমন্ত্রণ না পাওয়ায় তিনি এই বাদ দেওয়াকে "বিপজ্জনক" আখ্যা দিয়েছেন।  

অন্যদিকে, সৌদি আরবের মধ্যস্থতাকারী ভূমিকা ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়। ট্রাম্প ও পুতিন উভয়ের সাথেই সুসম্পর্ক থাকা এই রাজত্বটি ২০৩৪ ফিফা বিশ্বকাপ আয়োজনের পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি আলোচনার মাধ্যমে বৈশ্বিক মধ্যস্থতাকারী হিসেবে নিজেদের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে চায়।  


ঝুঁকি: নাজুক শান্তি নাকি বিপজ্জনক নজির? 

সমালোচকদের মতে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ পুতিনের আগ্রাসনকে পুরস্কৃত করবে এবং কর্তৃত্ববাদী শাসকদের উৎসাহিত করবে। কার্নেগি রাশিয়া ইউরেশিয়া সেন্টারের আলেকজান্ডার গাবুয়েভ মন্তব্য করেন, "এটি যেন পুতিনের জন্মদিন, ক্রিসমাস, ঈস্টার ও হানুকা একসাথে উদযাপন করা হচ্ছে!" যা মস্কোর আনন্দকে প্রতিফলিত করে।  


তবে কেউ কেউ যুক্তি দিচ্ছেন, ট্রাম্পের অপ্রচলিত কৌশল যুদ্ধের গতিরোধ ভাঙতে পারে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও বলেছেন, সৌদি আলোচনা শুধু "প্রথম ধাপ", এবং "এত জটিল যুদ্ধ একটি ফোনকলেই সমাধান হয় না!  


 পরবর্তী কী? 

সৌদি আলোচনা (১৭–২১ ফেব্রুয়ারি): রিয়াদে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া বৈঠক হবে, তবে ইউক্রেনের অংশগ্রহণ অনিশ্চিত।  

ইউরোপের পাল্টা কৌশল: ম্যাক্রোঁর জরুরি বৈঠকে ইউরোপীয় ঐক্য গঠনের চেষ্টা চলছে, যাতে ট্রাম্পকে অন্তর্ভুক্তিমূলক আলোচনায় বাধ্য করা যায়।  

বৈশ্বিক প্রভাব: যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া চুক্তি জোটের গতিপথ বদলে দিতে পারে, সৌদি আরবের কূটনৈতিক শক্তি বৃদ্ধি করবে এবং ন্যাটোর ঐক্য পরীক্ষা করবে।  

শেষ কথা: ট্রাম্পের এই ঝুঁকি হয়তো স্থায়ী শান্তি আনতে পারে  নয়তো ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও আন্তঃআটলান্টিক বিশ্বাস বিসর্জন দিয়ে ভূ-রাজনৈতিক ট্রফি কুড়ানোর চেষ্টা হতে পারে। জেলেনস্কির সতর্কবার্তা অনুযায়ী, "যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বাসযোগ্যতা এই যুদ্ধের পরিণতি থেকেই নির্ধারিত হবে!"  


এই সংবাদটি আরও আপডেট পেতে আমাদের সাথে থাকুন।  

*https://mirpurhdakanewsbd.blogspot.com/*

Post a Comment

0 Comments