Advertisement

0

ন্যানো ইউরিয়ায় বিপ্লব আনলেন যবিপ্রবি অধ্যাপক


                                     ৯৪% পর্যন্ত চাষাবাদের খরচ সাশ্রয় সম্ভব

যবিপ্রবির ন্যানো ইউরিয়া উদ্ভাবন: কৃষিতে ৯৪% ব্যয় সাশ্রয় ও টেকসই ভবিষ্যৎ




যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় উদ্ভাবিত ন্যানো ইউরিয়া পরিবেশবান্ধব ও খরচ সাশ্রয়ী। এ প্রযুক্তি কৃষিতে ৯৪% ব্যয় কমাবে এবং বাংলাদেশের অর্থনীতিতে টেকসই পরিবর্তন আনবে। বিস্তারিত পড়ুন।


বাংলাদেশের কৃষিতে টেকসই উন্নয়ন ও উৎপাদন বৃদ্ধির সম্ভাবনা তৈরি করেছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) গবেষক ড. জাভেদ হোসেন খানের নেতৃত্বে পরিচালিত এক গবেষণা প্রকল্প। উদ্ভাবিত হয়েছে পরিবেশবান্ধব ও খরচ-সাশ্রয়ী **ন্যানো ইউরিয়া**, যা প্রচলিত ইউরিয়ার বিকল্প হিসেবে কৃষকদের সামনে নতুন সম্ভাবনা এনে দিয়েছে।


 ন্যানো ইউরিয়া কী এবং কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ?


**ন্যানো ইউরিয়া** এমন একটি সার যা সরাসরি গাছের পাতায় স্প্রে করা হয়। এর কণাগুলো এতটাই ক্ষুদ্র যে গাছ দ্রুতা শোষণ করতে সক্ষম হয়। এর ফলে—


- অপচয় কমে আসে 

- মাটির গুণগত মান অক্ষুণ্ণ থাকে 

- উৎপাদনশীলতা বাড়ে 

- পরিবেশ দূষণ কমে


ড. জাভেদ হোসেন খানের গবেষণা অনুযায়ী, **ন্যানো ইউরিয়া প্রচলিত ইউরিয়ার তুলনায় ৯৪ শতাংশ খরচ সাশ্রয়ী**। উদাহরণস্বরূপ, যেখানে এক বিঘা জমিতে ইউরিয়া সারের জন্য প্রায় ৪২,০০০ টাকা খরচ হত, সেখানে ন্যানো ইউরিয়ার মাধ্যমে খরচ হবে মাত্র ২৩০ টাকা!




## মাঠপর্যায়ের সাফল্য: পরীক্ষিত ফলাফল


ন্যানো ইউরিয়ার কার্যকারিতা বগুড়ার শেরপুর, যশোরের আব্দুলপুর ও ঢাকার গাজীপুরে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে। ফলাফল দেখিয়েছে—


- চাষাবাদের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে 

- সার ব্যবহারের খরচ প্রায় ৯৪ শতাংশ কমেছে 

- জমির স্বাস্থ্য বজায় রয়েছে


স্থানীয় কৃষকরাও এই প্রযুক্তির সফল প্রয়োগে অত্যন্ত সন্তুষ্ট।


## আন্তর্জাতিক সহযোগিতা: যুক্তরাষ্ট্রের কোলা বায়োর সঙ্গে চুক্তি


২০২৫ সালের ২৩ এপ্রিল যবিপ্রবির ল্যাবরেটরি অব ন্যানো বায়ো অ্যান্ড অ্যাডভান্সড ম্যাটেরিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং যুক্তরাষ্ট্রের **কোলা বায়ো**-র মধ্যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর আওতায়—


- যবিপ্রবির ন্যানো ইউরিয়া প্রযুক্তি আন্তর্জাতিকভাবে ব্যবহৃত হবে 

- কোলা বায়ো নিজেদের জৈব সার প্রযুক্তি যবিপ্রবির সাথে শেয়ার করবে 

- যৌথ গবেষণা ও উৎপাদন কার্যক্রম চলবে আগামী পাঁচ বছর


এ উদ্যোগ বাংলাদেশকে বিশ্ব কৃষি প্রযুক্তি মানচিত্রেও নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে।




## অর্থনৈতিক প্রভাব: ব্যয় সাশ্রয় এবং পরিবেশ রক্ষা


বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় **৩০ লাখ টন ইউরিয়া** ব্যবহৃত হয়, যার ৮০ শতাংশ আমদানিনির্ভর। শুধু ২০২৪ অর্থবছরেই সরকারের ইউরিয়া আমদানিতে ব্যয় হয়েছে **৭ হাজার ১৬৯ কোটি টাকা**।


ন্যানো ইউরিয়া ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হলে—


- বছরে হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় সম্ভব 

- জমির দূষণ কমবে 

- কৃষিতে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত হবে




## ড. জাভেদ হোসেন খান: উদ্ভাবনের নায়ক


ড. জাভেদ হোসেন খান জাপানের ওয়াসেদা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি অর্জন করেছেন। গবেষণা ক্ষেত্রে রয়েছে তার—


- ১৩০টির বেশি আন্তর্জাতিক গবেষণাপত্র 

- ৬টি পেটেন্ট 

- ২০২২ সালের **জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমি স্বর্ণপদক** অর্জন


তার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ কৃষি প্রযুক্তিতে এক নতুন দিগন্তের পথে হাঁটছে।




## শেষ কথা


যবিপ্রবির ন্যানো ইউরিয়া শুধু কৃষকদের জীবন সহজ করবে না, বরং দেশের অর্থনীতি ও পরিবেশ সুরক্ষায় এক বিশাল ভূমিকা রাখবে। আগামী দিনে কৃষিতে টেকসই উন্নয়ন এবং খাদ্য নিরাপত্তার নিশ্চয়তায় এই প্রযুক্তি হতে পারে একটি বড় হাতিয়ার।


🌱 **আপনিও কী কৃষি খাতে ন্যানো ইউরিয়ার ভবিষ্যত সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদী? মন্তব্য করে আপনার মতামত জানান!**


 

`ন্যানো ইউরিয়া`, `যবিপ্রবি গবেষণা`, `কৃষিতে ব্যয় সাশ্রয়`, `পরিবেশবান্ধব সার`, `বাংলাদেশ কৃষি প্রযুক্তি`, `NATO Urea Bangladesh`

Post a Comment

0 Comments