Advertisement

0

ঢাকা থেকে ইউরোপ মাঈনুলের প্রোগ্রামিং জার্নির অবিশ্বাস্য উত্থান

 আজ শুক্রবার ৬রা আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২০ জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২২ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬ হিজরি


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স না পেলেও হাল না ছেড়ে প্রোগ্রামিংয়ে ক্যারিয়ার গড়েন মাঈনুল। আজ তিনি ইউরোপের সফল ফ্রিল্যান্সার।

ঢাকা থেকে ইউরোপ মাঈনুলের প্রোগ্রামিং জার্নির অবিশ্বাস্য উত্থান
ঢাকা থেকে ইউরোপ মাঈনুলের অবিশ্বাস্য উত্থান

মাঈনুলের গল্প: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পর্তুগালের সফটওয়্যার ডেভেলপার

এক অসমাপ্ত স্বপ্নের শুরু

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার প্রবল ইচ্ছা ছিলো মাঈনুলের। সে জন্য দিন-রাত পরিশ্রম করে ১৫-১৬ ঘণ্টা করে পড়াশোনা করেও সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। হতাশ হলেও থেমে যাননি। ভর্তি হন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্য বিভাগে। ঠিক তখনই শুরু হয় এক নতুন অধ্যায়—স্কিল ডেভেলপমেন্ট।

সিএসই নয়, ইউটিউব-ই হয়ে উঠলো শিক্ষক

ইউটিউব এক্সপ্লোর করতে করতে জানতে পারেন, কম্পিউটার সায়েন্স না পড়েও প্রোগ্রামার হওয়া সম্ভব। শুরু হয় শেখার যাত্রা—HTML, CSS, Python, Django—প্রতিটি স্কিল একে একে আয়ত্ত করেন।

বুটক্যাম্প থেকে আত্মবিশ্বাসের পথে

২০২০ সালের মাঝামাঝি, মাঈনুল ভর্তি হন একটি অনলাইন ওয়েব ডেভেলপমেন্ট বুটক্যাম্পে—প্রোগ্রামিং হিরো। কোর্সটি সফলভাবে সম্পন্ন করে চাকরির জন্য বিভিন্ন জায়গায় আবেদন করতে থাকেন।

হঠাৎ এক সুযোগ, আবার হঠাৎ বাধা

একদিন হঠাৎই তার চোখে পড়ে পর্তুগালের একটি কোম্পানি, Tempos Capital চাকরির বিজ্ঞাপন। আবেদন করেন, পছন্দ হয়, টাস্ক দেওয়া হয়। কিন্তু, হঠাৎ কুমিল্লা থেকে ঢাকায় যেতে হয় একটি জরুরি কারণে। ঢাকায় কোনো পিসি না থাকায়, ৪-৫ ঘণ্টার জন্য বোনের এক বান্ধবীর ল্যাপটপ ব্যবহার করেন। কিন্তু টাস্কের জন্য দরকার ছিল দুই দিনের সময়।

আবারও সুযোগ—এবার ছাড় নেই

মালিহা আপু, প্রোগ্রামিং হিরো'র জব প্লেসমেন্টিমের একজন সদস্য, ফোন করে জানান যে সময় বাড়ানো হয়েছে। এবার আর দেরি করেননি মাঈনুল। ফিরে যান কুমিল্লায়, শেষ করেন টাস্ক। সফলভাবে সম্পন্ন করা সেই টাস্কের ভিত্তিতেই ডাক পড়ে ইন্টারভিউতে।

টেকনোলজি চেঞ্জের প্রস্তাব, কিন্তু ভালোবাসা ছিল রিয়েক্টে

ইন্টারভিউ বোর্ড তাকে প্রস্তাব দেয় ভিন্ন টেকনোলজিতে কাজ করার। কিন্তু মাঈনুল তখন রিয়েক্ট নিয়ে অনেক আগ্রহী, এমনকি বলতে গেলে প্রেমে পড়েছিলেন এই ফ্রেমওয়ার্কের। মালিহা আপুর পরামর্শে কোম্পানিকে জানান তিনি রিয়েক্টে কাজ করতে চান। নিজেকে প্রমাণ করার জন্য চান ৬ সপ্তাহ সময়—পেলেনও।

স্কিলই সেরা পরিচয়

৬ সপ্তাহ পর নিজেকে এমনভাবে প্রমাণ করেন যে, কোম্পানি তাকে স্থায়ীভাবে নিয়োগ দেয় এবং বেতনও বাড়ায়। এরপর সময় গড়াতে থাকে। দেড় বছরের বেশি সময় পেরিয়ে যায় একটানা কাজ করে।

মাইগ্রেশন অফার: স্বপ্না বাস্তব?

লোডশেডিং ও কাজের অসুবিধার কারণে অন্য কোম্পানিতে চলে যেতে চেয়েছিলেন মাঈনুল। কিন্তু এমন কিছু হয় যার জন্য প্রস্তুত ছিলেনা—Tempos Capital নিজে থেকেই অফার দেয় পর্তুগালে মাইগ্রেট করার। বস নিজের বাবার বাসায় থাকার ব্যবস্থা করে দেন। প্রায় ১৫-২০ লক্ষ টাকা খরচ যেটা তার নিজে বহন করার কথা ছিল, কোম্পানি পুরো স্পন্সর করে শুধুমাত্র তার স্কিলের জন্য।

ইউরোপের নতুন অধ্যায়

বর্তমানে পর্তুগালে বসবাস করেন মাঈনুল। চাকরি ছেড়ে এখন সফলভাবে ফ্রিল্যান্সিং করছেন Upwork।

তিনি বলেন,

"আমি মাঝে মাঝে নিজেকেই বিশ্বাস করতে পারি না। কোথা থেকে কোথায় চলে এসেছি আমি।"

যে বুটক্যাম্প বদলে দিলো জীবন

মাঈনুল প্রোগ্রামিং হিরো'র দ্বিতীয় ব্যাচের ছাত্র। এখান থেকেই শুরু হয়েছিল তার প্রফেশনাল ক্যারিয়ারের ভিত্তি। সেই বুটক্যাম্প ৪৮০০+ শিক্ষার্থীকে চাকরি কিংবা ইন্টার্নশিপেতে সাহায্য করেছে।

🔎 FAQs

মাঈনুল কোথা থেকে প্রোগ্রামিং শেখা শুরু করেন?

তিনি ইউটিউব থেকে শেখা শুরু করেন এবং পরে প্রোগ্রামিং হিরো'র বুটক্যাম্পে ভর্তি হন।

মাঈনুল কীভাবে ইউরোপে যান?

তার কোম্পানি Tempos Capital তার স্কিল দেখে পর্তুগালে মাইগ্রেট করার অফার দেয় এবং সম্পূর্ণ খরচ বহন করে।

তিনি এখন কোথায় কাজ করছেন?

বর্তমানে তিনি চাকরি ছেড়ে আপওয়ার্কে ফ্রিল্যান্সিং করছেন এবং ভালো অবস্থানে আছেন।

কোন প্রযুক্তিতে কাজ করেন মাঈনুল?

তিনি React, Python এবং Django নিয়ে কাজ করেন। Reaction প্রতি তার বিশেষ আগ্রহ রয়েছে।

তার সফলতার মূল কারণ কী?

অবিচল অধ্যবসায়, প্রপার গাইডেন্স (যেমন মালিহা আপু), এবং নিজেকে প্রমাণ করার দৃঢ় মনোভাব।   ( সংগৃহীত )

অবিচল অধ্যবসায়, প্রপার গাইডেন্স (যেমন মালিহা আপু), এবং নিজেকে প্রমাণ করার দৃঢ় মনোভাব।

Post a Comment

0 Comments