Advertisement

0

মেডিকেলে নবাগতদের স্বপ্ন ভাঙবেন না, সাহস দিন

বৃহঃস্পতিবার ৫ই আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৯শে জুন ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ, ২২শে জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬ হিজরি, বর্ষা-কাল

মেডিকেলে নবাগতদের স্বপ্ন ভাঙবেন না, সাহস দিন মেডিকেলে নবাগতদের স্বপ্ন ভাঙবেন না, সাহস দিন

মেডিকেলে নবাগতদের স্বপ্ন ও সাহসকে ভয় না দেখিয়ে পাশে দাঁড়ানোই উচিত সিনিয়রদের। ডাক্তারি পথ কঠিন হলেও সুন্দর—এটাই বার্তা হওয়া উচিত।

লেখক: অভিজ্ঞ মেডিকেল ইন্টার্নী ও পর্যবেক্ষক, জাহারা মুজনেবিন

🌟 মেডিকেলাইফের প্রথম দিন: স্বপ্নের শুরু

আজ দেশের সব মেডিকেল কলেজে নবাগত শিক্ষার্থীদের জন্য ছিল ওরিয়েন্টেশন ডে। নতুন ব্যাগ, সাদা এপ্রোন, কিছুটা লাজুক অথচ স্বপ্নমাখা চোখ—এটাই ছিল মেডিকেল প্রাঙ্গণের চেনা চিত্র। এদের অনেকেই এসেছে ছোটবেলার লালিত স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে, অনেকেই এসেছে কঠোর পরিশ্রম আর ত্যাগের গল্প শুনে অনুপ্রাণিত হয়ে।

এদের কাছে দিনটি ছিল বিশেষ। প্রথমবার ক্লাসরুম, নতুন বন্ধুরা, শিক্ষক-পরিচিতি—সব কিছুতেই একধরনের আনন্দ, উত্তেজনা, ভবিষ্যৎকে ছুঁয়ে দেখার চেষ্টা।

🤔 কিন্তু কিছু পোস্টে হতাশার ছাপ

দুঃখজনক হলেও সত্য, সামাজিক মাধ্যমে কিছু সিনিয়রের পোস্ট আজ সেই আনন্দকে খানিকটা বিষণ্ণ করে তুলেছে। পোস্টগুলোতে ছিল এমন সব মন্তব্য—

"এই সুখ কয়দিনের"

"এই হাসি আজীবনের কান্না হবে"

"সময় থাকতে অন্য প্রফেশনে যা"

এমন মন্তব্য সত্যিই হতাশাজনক। একদিকে যখন নতুন শিক্ষার্থীরা নিজেদের স্বপ্নপূরণের পথে হাঁটতে শুরু করেছে, তখন এরকম নেতিবাচক বার্তা তাদের আত্মবিশ্বাসে আঘাত হানতে পারে।

🧠 মেডিকেলাইফ কঠিন, কিন্তু গর্বেরও

হ্যাঁ, মেডিকেল প্রফেশন সহজ নয়। এটি এমন একটি পেশা যেখানে আজীবন শেখার প্রক্রিয়া চলে। নতুন রোগ, চিকিৎসা পদ্ধতি, সেবার মান উন্নয়ন—সবকিছুতেই নিজেকে আপডেটেড রাখতে হয়। কিন্তু সেই কঠিন পথ পেরিয়েই তৈরি হয় একজন দক্ষ ডাক্তার, একজন মানুষের জীবনের আলো হয়ে ওঠা ব্যক্তি।

জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই যেমন চড়াই-উতরাই থাকে, তেমনি মেডিকেল পেশাতেও আছে। কিন্তু তাই বলে স্বপ্ন ভাঙা, ভয় দেখানো কখনোই দায়িত্ববান আচরণ নয়।

👨‍⚕️ একজন সিনিয়র হিসেবে দায়িত্ব কী?

সিনিয়রদের দায়িত্ব শুধু অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়া নয়, বরং নবাগতদের পাশে দাঁড়ানো, সাহস জোগানো এবং ভবিষ্যৎ পথ চলায় অভয় দেওয়া।

তাদের শেখাতে হবে—“তুমি পারবে, আমরা পাশে আছি”। প্রতিটি বড় ভাই-বোনের উচিত নবীনদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া, তাদের অনুপ্রাণিত করা।

❤️ ডাক্তারি: কষ্টে গড়া এক সুন্দর পথ

প্রতিবার যদি আমাকে পেশা পরিবর্তনের সুযোগ দেওয়া হয়, আমি বারবার ডাক্তার হতেই চাইব। কষ্ট হয়, ক্লান্তি আসে, কিন্তু রোগীর সুস্থতার হাসি যে অনুভূতি দেয়, সেটার সঙ্গে কোনো কিছুর তুলনা হয় না।

🔔 সামাজিক বার্তা (Moral Speech):

❝ যেখানে স্বপ্ন শুরু হয়, সেখানে ভয় নয়, সাহস প্রয়োজন। নবীনদের হাসির পেছনে যেন থাকে সাহসের হাত, ব্যঙ্গ নয়। ❞

❝ একজন ডাক্তার শুধুই রোগ নিরাময়কারী নয়, একজন সাহস যোগানো মানুষও—সেটা শুরু হোক জুনিয়রদের দিক থেকে। ❞

💬 FAQ (প্রশ্নোত্তর)

প্রশ্ন: মেডিকেলে নবাগতদের সাহস দেওয়া কেন জরুরি?

উত্তর: কারণ, কঠিন পথেও পাশে কেউ আছে—এই বিশ্বাস তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায় ও মানসিক চাপ কমায়।  তারা তাদের বাবা-মায়ের থেকে অনেক দূরে।

প্রশ্ন: মেডিকেলাইফ কি খুব কষ্টের?

উত্তর: হ্যাঁ, কষ্টের, কিন্তু তা গর্বেরও। যত কষ্টই হোক, একজন মানুষের প্রাণ বাঁচানোর ক্ষমতা অর্জন সবচেয়ে বড় অর্জন।

প্রশ্ন: সিনিয়ররা কীভাবে নবাগতদের পাশে থাকতে পারেন?

উত্তর: উৎসাহ দিয়ে, বাস্তবতা বুঝিয়ে, সহানুভূতি দিয়ে, নেতিবাচকতা ছড়িয়ে নয়।

প্রশ্ন: সব পেশাতেই কি কষ্ট আছে?

উত্তর: হ্যাঁ, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই সংগ্রাম আছে। স্বপ্নপূরণ মানেই কখনো সহজপথ নয়, বরং কঠিন পথে সাহসের যাত্রা।

Post a Comment

0 Comments