Advertisement

0

ইরানের 'ফাত্তাহ-১' ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও খামেনির যুদ্ধ ঘোষণা

আজ  বুধবার ৪ঠা আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৮ই জুন ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ, ২১শে জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬ হিজরি, বর্ষা-কাল.

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত নতুন উচ্চতায়। 'ফাত্তাহ-১' হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে সর্বোচ্চ নেতা খামেনি যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন।

ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার নতুন ধাপ: 'ফাত্তাহ-১' ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও সর্বোচ্চ নেতার যুদ্ধ ঘোষণা

ইরানের 'ফাত্তাহ-১' ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও খামেনির যুদ্ধ ঘোষণা
 ইরানের 'ফাত্তাহ-১' ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও খামেনির যুদ্ধ ঘোষণা

আইআরজিসি’র হামলা: 'অপারেশন অনেস্ট প্রমিস ৩'

মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা আবারো চরমে উঠেছে। ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) ঘোষণা করেছে, তারা 'ফাত্তাহ-১' হাইপারসনিক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ইসরায়েলে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে। এই হামলা ‘অপারেশন অনেস্ট প্রমিস ৩’-এর ১১তম ধাপে সংঘটিত হয় বলে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে জানানো হয়েছে।

আইআরজিসি দাবি করেছে, পশ্চিম তীরের আকাশ এখন তাদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। এই হামলার মাধ্যমে তারা একযোগে সামরিক ও মনস্তাত্ত্বিক শক্তি প্রদর্শন করতে চায় বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

ট্রাম্পের হুমকি ও খামেনির পাল্টা ঘোষণা

এই উত্তেজনার সূত্রপাত হয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একাধিক আক্রমণাত্মক পোস্টের মাধ্যমে। ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে বলেন, "আমরা জানি তথাকথিত ‘সর্বোচ্চ নেতা’ কোথায় লুকিয়ে আছেন।" তিনি ইঙ্গিত দেন, আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি সহজ লক্ষ্যবস্তু হলেও আপাতত তাকে হত্যা করা হবে না।

ট্রাম্প আরো বলেন, “ইরানের আকাশসীমা এখন আমাদের নিয়ন্ত্রণে। তবে আমরা চাচ্ছি না বেসামরিক নাগরিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হোক। কিন্তু আমাদের ধৈর্য ক্ষীণ হয়ে আসছে।”

এই মন্তব্যের পরপরই খামেনি সামাজিক মাধ্যমে লিখেন, "মর্যাদাবান হায়দারের নামে যুদ্ধ শুরু হল।" তিনি ঘোষণা দেন, সন্ত্রাসী ইহুদিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে এবার কঠিন জবাব আসবে।

ব্যাপক রকেট হামলায় কেঁপে উঠল ইসরায়েল

টাইমস অফ ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুদ্ধ ঘোষণার পর মধ্যরাত ১২টা ৪০ মিনিটে প্রথম ব্যারাজে ইরান ১৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে, যা ইসরায়েলের বিভিন্ন অঞ্চলে আঘাত হানে। এরপর প্রায় ৪০ মিনিট পর দ্বিতীয় ব্যারাজে আরও ১০টি রকেট নিক্ষেপ করা হয়, যার ফলে ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চল ও পশ্চিম তীরজুড়ে বিপদ সংকেত বেজে ওঠে।

সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, ইরান থেকে ইসরায়েলের দিকে ছোড়া হয়েছে ৩৭০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র এবং শত ড্রোন। এতে এখন পর্যন্ত ২৪ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন অন্তত ৫০০ জনের বেশি।

‘ফাত্তাহ-১’ হাইপারসনিক প্রযুক্তির হুমকি

বিশেষজ্ঞদের মতে, ইরানের ফাত্তাহ-১ হাইপারসনিক্ষেপণাস্ত্র এমন একটি প্রযুক্তি, যা ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ। এই মিসাইল শত্রুরাডার এড়িয়ে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম, যা কৌশলগতভাবে একটি বড় ধাক্কা।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

এই ঘটনার পর বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়ছে। জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন উভয়পক্ষকে সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার কার্যকর উদ্যোগ চোখে পড়েনি।

FAQs (প্রশ্নোত্তরে সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণ):

ইরান ‘ফাত্তাহ-১’ ক্ষেপণাস্ত্র কেন ব্যবহার করেছে?

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিশোধ নিতে ও নিজেদের সামরিক শক্তি প্রদর্শনে ইরান এই হাইপারসনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে।

যুদ্ধ ঘোষণার পেছনে আসল কারণ কী?

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্য ও হুমকির প্রতিক্রিয়ায় ইরানের সর্বোচ্চ নেতা যুদ্ধের ঘোষণা দেন।

ইসরায়েলে কী ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে?

৩৭০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ও শত ড্রোন হামলায় অন্তত ২৪ জন নিহত ও ৫০০+ মানুষ আহত হয়েছেন।

এই হামলা কি আন্তর্জাতিক যুদ্ধের সূচনা?

পরিস্থিতি দ্রুতই বৃহৎ আকার ধারণ করতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা, তবে এখনই পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ বলা যাচ্ছে না।

ফাত্তাহ-১ কী ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র?

এটি একটি হাইপারসনিক মিসাইল, যার গতি শব্দের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি এবং এটি রাডার এড়িয়ে আঘাত হানতে সক্ষম।


Post a Comment

0 Comments