Advertisement

0

সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতি এক কোটির বেশি শিক্ষার্থীর শিক্ষা কার্যক্রম অনিশ্চিত

 ১১তম বেতন গ্রেডসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে গেছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা, শিক্ষা কার্যক্রমে বড় প্রভাব পড়ছে।

আন্দোলনের মূল দাবি ও প্রেক্ষাপট

সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতি এক কোটির বেশি শিক্ষার্থীর শিক্ষা কার্যক্রম অনিশ্চিত
সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতি 

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা আজ (২৬ মে) থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতিতে গেছেন। তাদের তিন দফা মূল দাবির মধ্যে রয়েছে:

চাকরির শুরুতেই ১১তম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ

১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা দূর করা

প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ পদোন্নতি নিশ্চিত করা

সহকারী শিক্ষক সংগঠনগুলোর জোট 'সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ' জানিয়েছে, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

আন্দোলনের প্রভাব ও ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাব্যবস্থা

দেশজুড়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় এক কোটি ১০ লাখ শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। তাদের ওপরই নির্ভর করছে দেশের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা। কিন্তু সহকারী শিক্ষকরা কর্মবিরতিতে যাওয়ায় এই বিশাল সংখ্যক শিশু এখন পড়ালেখার অনিশ্চয়তার মুখে।

আগামী ৩ জুন থেকে ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হবে, ফলে তার আগের কার্যদিবসগুলোও শিক্ষাব্যবস্থা কার্যত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

শিক্ষক ও অভিভাবকদের মতামত

বরগুনার এক অভিভাবক মারজানা আক্তার জানান, “সরকারি স্কুলে আমার মেয়ের পড়াশোনায় সন্তুষ্ট নই। অনেক ছুটি থাকে, এখন আবার আন্দোলন হলে আরও পিছিয়ে পড়বে।”

কেরানীগঞ্জের এক শিক্ষক শাহিনুর আক্তার বলেন, “৮৮ শতাংশিক্ষকের চাকরির বয়স চার বছরের বেশি। তাই সবার জন্য ১১তম গ্রেড দাবি করছি।”

বর্তমান বেতন কাঠামো এবং দাবি

বর্তমানে সহকারী শিক্ষকরা ১৩তম গ্রেডে বেতন পান, যার মূল পরিমাণ মাত্র ১১ হাজার টাকা। অন্যান্য ভাতা যোগ করে মোট প্রায় ১৯ হাজার টাকা। দক্ষিণ এশিয়ায় এটি সর্বনিম্ন বেতনের মধ্যে পড়ে।

বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান শাহিন বলেন, “এ বেতন দিয়ে পরিবার চালানো অসম্ভব। মেধাবীদের এই পেশায় টিকিয়ে রাখতে হলে সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে।”

সময় নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক

শিক্ষাবিদ রাশেদা কে চৌধুরী আন্দোলনের যৌক্তিকতা স্বীকার করলেও সময় নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি এখনো কাটেনি। এমন সময়ে কর্মবিরতি অনুপযুক্ত।”

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিরবতা

দাবি পূরণের বিষয়ে এখনো শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়নি।

📌 প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্মবিরতি নিয়ে সাধারণ জিজ্ঞাসা (FAQ)

প্রশ্ন: শিক্ষকরা কী কারণে আন্দোলনে গেছেন?

উত্তর: তারা চাকরির শুরুতে ১১তম বেতন গ্রেডসহ তিন দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলনে নেমেছেন।

প্রশ্ন: আন্দোলনের কারণে কী ধরনের প্রভাব পড়ছে?

উত্তর: শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে, ফলে শিক্ষার্থীদের শিখনে বড় ঘাটতি তৈরি হচ্ছে।

প্রশ্ন: আন্দোলন কতদিন চলবে?

উত্তর: দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছে শিক্ষক সংগঠন।

প্রশ্ন: বর্তমান বেতন কাঠামো কেমন?

উত্তর: বর্তমানে সহকারী শিক্ষকরা ১৩তম গ্রেডে বেতন পান, যার মূল বেতন ১১ হাজার টাকা।

প্রশ্ন: সরকারের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কি?

উত্তর: এখনও পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আলোচনার উদ্যোগ বা ঘোষণা আসেনি।


Post a Comment

0 Comments